বন্ধুরা, তোমাদের নবম দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান বইয়ের ১ম অধ্যায়ের ৬ পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু হচ্ছে জীবের শ্রেণিবিন্যাস। জীবের শ্রেণিবিন্যাস কি? কেনই বা জীবের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়? এসমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তোমাদের সামনে হাজির হয়েছি। তো চল, দেড়ি না করে শুরু করা যাক।
আমাদের এই পৃথিবীতে কতোগুলো জীবের অস্তিত্ব আছে, তার সঠিক হিসাব কেউই দিতে পারবে না। এতগুলো জীব আমাদের এই পৃথিবীতে বাস করে যে, এদের নাম বা বৈশিষ্ট আমাদের মনে রাখা অনেক কঠিন। তাছাড়া, বিভিন্ন জীবের বৈশিষ্ট বিভিন্ন রকমের। ফলে, এতগুলো বৈশিষ্ট কীভাবে আমরা আমাদের স্মৃতিতে ধারণ করব?
তোমরা তো জানোই যে, আজ পর্যন্ত উদ্ভিদের প্রায় ৪ লক্ষ প্রজাতি এবং প্রাণীর প্রায় ১৩ লক্ষ প্রজাতি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। তো এতো সংখ্যক উদ্ভিদ আর প্রাণীর নাম আমরা কখনোই মুখস্ত রাখতে পারব না। কিংবা, এদের বৈশিষ্ট যে কত রকমের, তা হিসাব করতে বা জানতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাছাড়া, কাউকে শেখাতে গেলেও আমাদের হিমশিম খেতে হবে।
ফলে আমাদের একটা এমন পদ্ধতির দরকার হচ্ছে, যার মাধ্যমে আমরা অল্প সময়ে, অল্প পরিশ্রমে, সঠিকভাবে এতগুলো জীব সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি। আর এই পদ্ধতিটাই হচ্ছে জীবের শ্রেণিবিন্যাস।
জীবের শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজন যে হচ্ছে, সেটা তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছ। কিন্তু, এই যে শ্রেণীবিন্যাস, এটার নিয়মনীতির জন্য জীববিজ্ঞানের একটা শাখার দরকার হচ্ছে। এই যে নতুন শাখার দরকার পড়ছে, এটাই হলো জীববিজ্ঞানের “শ্রেণিবিন্যাস বা ট্যাক্সোনমি” শাখা।
এবার চল জেনে নিই যে, এই শ্রেণিবিন্যাসের মূল লক্ষ কি? আর কি এর উদ্দেশ্য?
জীববিজ্ঞানের এই শাখার মূল লক্ষ্য তো একটাই। আর সেই লক্ষ্যটা হচ্ছে, অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প সময়ে এই বিশাল এবং বৈচিত্রময় জীবজগৎকে সঠিকভাবে জানা এবং সে বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা।
আর এই শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের এই জীবজগৎকে ভালোভাবে চেনা। এই শ্রেণিবিন্যাসের মূল উদ্দেশ্যগুলো নিচে ধারাবাহিকভাবে আমি দিয়ে দিচ্ছি।
১) এর মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীর প্রতিটি জীবের দল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারব।
২) শুধু দল নয়, বরং; দলের উপদল সম্পর্কেও আমরা জ্ঞান আহরণ করতে পারব।
৩) জীবজগতের যে ভিন্নতা আছে, সেদিকে আলোকপাত করে আমরা যে জ্ঞানকে আহরিত করি, তাকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারব।
৪) আমাদের এই পৃথিবীর অনেক জীব সম্পর্কে আমরা অনেকেই পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান লাভ করেছি। আমাদের এই পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করতে আমাদের অবশ্যই এই শ্রেণিবিন্যাসের দরকার পড়বে।
৫) প্রতিটি জীবকে আলাদা করে শনাক্ত করতে পারব।
৬) শুধু শনাক্তই নয়, তাকে শনাক্ত করে তার নামকরণের ব্যাবস্থা করতে পারব।
৭) আমাদের এই জীবজগৎ কে সংরক্ষণ করতে পারব।
৮) মানব কল্যাণে আমরা প্রয়োজনীয় জীবগুলোকে শনাক্ত করতে পারব।
৯) সেই সমস্ত জীবের সংরক্ষণে আমরা সচেতন থাকতে পারব।
১০) সর্বোপরি এই বিশাল জীবজগৎ কে খুব অল্প সময় আর পরিশ্রমে জানতে এবং চিনতে পারব।
তো, বন্ধুরা বুঝতে পারলে তো, কেন আমাদেরকে শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে জানতে হবে, আর কেনই বা এটি জীববিজ্ঞানের একটি শাখা হয়ে গেলো। বুঝতে পারলে বল তো, আমি এখানে এই শ্রেণিবিন্যাসের জনকের নাম কি উল্লেখ করেছি? না, করি নি। আমি তোমাদের কাছেই তা জানতে চাচ্ছি। দেখা যাক, কে কে এই জীববিজ্ঞান বইটা পড়েছ।
তোমাদের কাছে তাহলে প্রশ্নটা হলোঃ কে এই শ্রেণিবিন্যাসের জনক?
তোমাদের মূল্যবান কমেন্ট করে তার উত্তর জানিয়ে দিও।
ধন্যবাদ সকলকে।