১) ফ্রিল্যান্সিং এ হতাশার সর্ব প্রথম এবং প্রধান কারণটি হচ্ছে ফ্রীল্যান্সিং সম্পর্কে ভালোমতো না জেনে/বুঝে অন্ধের মতো ঝাঁপ দেয়া।
—> আমার লাইফের শুরুতে ৩৫০০০-টাকা ধরা খাইলাম এই ফ্রীল্যান্সিং শিখতে যেয়ে। এই জন্য আমি নিজেকেই দায়ী করি বা আমি নিজেই দায়ী। কারণ আমি আসলে না জেনে/বুঝে এবং চটকদার বিজ্ঞাপনে দেখ বিচার-বিবেচনা না করেই অন্ধের মতো ফ্রীল্যান্সিংয়ে ঝাঁপ দিছিলাম আর ফলাফল ব্যর্থতা। ইনস্টিটিটউ তো বাজে ছিলোই আর ট্রেইনারের কথা না হয় আর নাই বা বললাম। যাইহোক ঠকবাজরা ঠকাতে চাইবে তবে আমার বিচার-বিদ্ধু খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বোকার মতো যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠকে গেলে তখন আর ঠকবাজদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। তবে আমি পরবর্তীতে আশা ছেড়ে না দিয়ে এগিয়ে গেছি এবং সফলতা পেয়েছি।
উপদেশ –> আজকাল ব্যাঙের ছাতার মতো ফ্রীল্যান্সিং ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট এবংট্রেইনার বের হইছে যাদের মধ্যে ৯০%-ই ভুয়া। এইসব চটকদার বিজ্ঞাপনে যথেষ্ট মিথ্যা প্রলোভন থাকে। মিথ্যা প্রলোভনে আকৃষ্ট না হয়ে বিচার-বিবেচনা করে এবং নিজের পছন্দ বা আগ্রহ আছে এমন বিষয়ে ট্রেনিং নেন এবং অবশ্যই ভালো কোন প্রতিষ্ঠান এবং ট্রেইনারের কাছে শিখবেন। আর অবশ্যই জীবনে মাগনা কোনো কিছুর আশা করবেননা মনে রাখবেন মাগনা এই পৃথিবীতে কোনো কিছু নাই সো যতো দ্রুত এই বিষয়টা বুঝতে পারবেন ততো ভালো।
২) বিষয় নির্বাচন।
অমুকে তমুক ক্ষেত্রে ফ্রীল্যান্সিং করে কোটিপতি হয়ে গেছে। এখন অমুকের তমুক বিষয় আপনাকে স্যুট নাও করতে পারে সো এই ক্ষেত্রে নিজে কি শিখবেন বা আপনার কোনো বিষয়ে আগ্রহ আছে অথবা আপনার পক্ষে কোন বিষয়ে ট্রেনিং নেয়াটা সুবিধাজনক বা সম্ভব মনে হয় ওই বিষয়টাতেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। অন্ধের মতো অমুকের তমুক বিষয়ের পিছনে সময়, শ্রম এবং টাকা নষ্ট করার কোনো মানে হয়না এমন করলে হয়তো মাঝপথে যেয়ে মনে হবে আমিতো বিরানী প্রিয় মানুষ হুদাই কেন অন্যের বুদ্ধিতে চাইনিজ খেতে আসলাম।
৩) মাইন্ড সেট।
আপনি কি শিখতে চান কেন শিখতে চান এবং এর পিছনে আপনার উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কি? খুব গুরুত্ব সহকারে এই বিষয়টি বিবেচনা করেন এবং সেই অনুযায়ী কোনো বিষয় বা ক্ষেত্রে ট্রেনিং নিবেন বা শিখবেন সেটা নির্ধারণ করেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় বা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন –> যেমনঃ- আমি ওয়ার্ডপ্রেস/এসইও/গ্রাফিক্স-ডিজাইন/ডিজিটাল মার্কেটিং/অন্যান্য (যেকোনো ১/২-টি) শিখবো, আগামী ৬/৮-মাসের মধ্যে শিখবো/ ১০-মাস/১-বছর থেকে আমি ইনকাম করা শুরু করবো।
৪) স্কিলের চাইতে টাকা ইনকাম করাকে অধিক গুরুত্ব না দেয়া।
ভুলেও কখনোই স্কিলের চাইতে টাকা ইনকাম করাটাকে অধিক গুরুত্ব বা প্রাধান্য দিবেননা কারণ অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। আপনি হয়তো হালকা কিছু কাজ শিখেই ইনকাম শুরু করতে পারবেন কিন্তু সেটা পার্মানেন্ট হবেনা আমি পরবর্তী সময়ে কাজের ক্ষেত্রে আটকে যাবেন বা কাজ পাবেননা অথবা আপনার পক্ষে বড় বা কঠিন কাজ করা সম্ভব হবেনা। আপনি যেই ক্ষেত্রেই কাজ করেননা কেন আপনাকে মনে রাখতে হবে ফ্রীল্যান্সিংয়ে আপনাকে সারা বিশ্বের বাঘা বাঘা দক্ষ এবং অভিজ্ঞ লোকদের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে হবে সুতরাং আপনার নির্দিষ্ট বিষয়/ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সর্বোচ্চ লেভেলের দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হতে হবে।
৫) ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা।
ইংরেজিতে দক্ষতা আপনাকে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই অকল্পনীয় এডভ্যান্টেজ দিবে। আমার এক ম্যাডাম ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আমাকে বলছিলো নিজেকে স্মার্ট মানুষদের (পুরুষ) লিস্টে অন্তুর্ভুক্ত করার জন্য কিছু যোগ্যতা/দক্ষতা থাকা বাধ্যতামূলক যেমনঃ- ১) উচ্চ শিক্ষা/কর্মমুখ কারিগরি শিক্ষা ২)সাঁতার জানা ৩) ড্রাইভিং জানা ৪) ইংরেজিতে কথা বলতে পারা। ইংরেজিতে ভালো দক্ষতার কারণে জীবনে অনেক জায়গায় এক প্রকার বলতে পারেন বিভিন্ন ভাবে অন্যায় সুবিধাই পাইছি এমন হইছে যে কাজ পারিনা কিন্তু ইংরেজিতে দক্ষতার কারণে কোনো না কোনো ভাবে ক্লায়েন্টকে কনভিন্স করে কাজ নিয়ে নিছি। পরে দেখা গেছে যে হয় কাজ শেষ করতে পারিনি অথবা অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে জমা দিছি আমি যদিও এখন আর এমন করিনা তবে অনেকেই হয়তো এখনো এমন করে।
৬) মার্কেট প্লেস সম্পর্কে ধারণা / দক্ষতা / অভিজ্ঞতা।
নতুন অবস্থায় অভিজ্ঞতা থাকবেনা এইটাই স্বাভাবিক সো এইটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা এমনিতেই চলে আসবে। ক্লায়েন্ট যখন নতুন কাউকে কাজ দেয় তারা জানেই যে এই লোকের অভিজ্ঞতা থাকবেনা কারণ সে নতুন আর নতুনদের অভিজ্ঞতা থাকেনা এইটা যে সাইন্স এইটা তারা বুঝে। বুঝিনা শুধু আমরা বাঙালীরা।
দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা আপনার থাকতেই হবে হুদাই মার্কেট প্লেস লাফ দিবেননা। আপনার নির্দিষ্ট বিষয়ে যথেষ্ট পরিমান দক্ষতা অর্জন করেন প্র্যাক্টিস করেন এবং কনফিন্ডলী মার্কেট প্লেস ঝাঁপ দেন। এমন যেনো না যে, বায়ো তে লিখছেন আমি এক্সপার্ট উপরের পার্ট কিন্তু কাজ পাওয়ার পরে আপনার অমুক ভাই তমুক ভাইয়ের কাছ দৌড়া-দৌড়ি করতে হয়ে –> ভাই এইটা কি? ভাই ঐটা কি? এইটা কেমনে? ঐটা কেমনে?
অবশ্যই মার্কেট প্লাসে যাওয়ার আগে বিভিন্ন বেসিক বিষয় সম্পর্কে একদম ক্লিয়ার-কাট ধারণা রাখবেন প্রয়োজনে ইউটিউব এর ভিডিও দেখবেন গুগল করে ইনফো জেনে নিবেন। সিনিয়রদের সাহায্য নিবেন।
এক্সট্রা টিপস —> অধ্যবসায় এবং পরিশ্রম।
সফলতার ক্ষেত্রে অধ্যবসায়ের (বার বার চেষ্টা করা) বিকল্প নাই। নিয়মিত পরিশ্রম করতে হবে কাজ এবং শেখা উভয় ক্ষেত্রে কারণ —> পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি।
ধন্যবাদ সবাইকে এবং হ্যাপি ফ্রীল্যান্সিং।
আউটসোর্সিং করতে হলে যা মাথায় রাখতে হবে
আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত ভিউয়ারস, শিরোনাম দেখে আপনারা মনে করছেন আউটসোর্সিং করতে কোন কোন কোর্স করতে হবে? কি কি শিখতে হবে?...