উড়ে এসে ফিরে যায় পাখি
-মাসুম বাদল
অতিথি পাখি
উড়ে এসে ফিরে চলে যায় আপন খেয়ালে
এই গল্পে কোন ভালবাসা-বাসি নাই
আমরাই ঝরা পালক কুড়ায়ে লয়ে ভালবাসা করি অনুভব।।
ভাল যদি নাই বাসে-
তবে কেনো ফিরে আসে ফের আবারো পরের শীতে
আবারো তবে কেনো ফিরে চলে যায় –
ফটফটে পালক ঝরায়ে!
[অন্তর্নিহিত ভাবঃ শুধুই মানুষ বলে নয়; আসলে প্রকৃতি বড়ই বিচিত্র। প্রকৃতির রুপ বৈচিত্রে ভরা।
আমরা কিছু ব্যাখ্যা করি তার – কিছু বা ব্যাখ্যার অতীত। তাও আবার পুরোটাই অনুমান যেন।
প্রকৃতির অপরুপ সৃষ্টির সবাই একে অপরের উপর যেন নির্ভরশীল – একে অপরের পরিপূরক।
নির্ভরশীলতার জালই যেন প্রক্রিতিকে করে রেখেছে একটা অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা। এই নির্ভরশীলতার জালই যেন
প্রক্রিতিকে করে রেখেছে শৃঙ্খলিত। বাস্তু সংস্থান, খাদ্য শৃঙ্খল, খাদ্যজাল, ঋতুচক্র, পানিচক্রের ঘোরা ফেরা
এগুলো সবই এই নির্ভরশীলতা খুব সহজবোধ্য উদাহরণ।
অতিথি পাখিদের এই যে বছর বছর শীতে ঘুরে ঘুরে আমাদের এই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে আসা;
এসে আবারো শীত শেষ হলে ফিরে যাওয়া তাদের আপন ঠিকানায় – এতো প্রকৃতির চক্রেই বাঁধা।
প্রকৃতি তাদেরকে করে রেখেছে এক ঘূর্ণায়মান চক্রে বাঁধা। যখন তারা আপন নীড়ে আর টিকতে পারে না
প্রবল শীতে বা শীত বেড়ে গেলে। শীত বেড়ে গেলে উষ্ণতার খোঁজে – জীবন বাঁচানোর তাগিদেই তারা
আমাদের এই সবুজ শ্যামল সুন্দর দেশে। জানে তারা কখন কমবে শীত আপন আবাসে –
ঠিক তখনই নীড়ের টানে – নীড়ের প্রতি ভালবাসার টানে আবারো ফিরে যায় তাই। শূন্য আঙিনায়
পড়ে থাকে তাদের ফেলে যাওয়া পালক। আমরা সেই ঝরা পালক কুড়ায়ে লয়ে কিংবা দেখে
তাদের প্রতি ভালো বাসা করি অনুভব। স্মৃতিচারণ করি তাদের বিচরণে ভরে ওঠা জলাশয় গুলির রুপ সৌন্দর্যের।
অপেক্ষায় থাকি আবারো পরের শীতের। প্রাণ ভরে অপেক্ষা করি তারা যেন আসে ফের – তারা যেন আবারো আসে
আমাদের সবুজ আঙিনায় – আবারো পরের শীতে। এটাও বুঝি তারা আসবেই -আসতে তারা বাধ্য; ভালবেসে না হলেও
আমাদেরকে ভাল না বেসে হলেও তারা আসবে। নিজেদের জীবন বাঁচানোর তাগিদে – প্রকৃতির বেঁধে দেয়া সুশৃঙ্খল চক্র মেনেই
তারা আসবে। আসবেই। তারা আসে। তারা এসে প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আবারো ফিরে যাবে। ফিরেই যায় তারা। ]