শহরের পাশে একটি গ্রাম, সেই গ্রামের নাম মহদীপুর। সেই গ্রামে বাস করত প্রায় ১২০০ পরিবার। সেই গ্রামের এক ব্যক্তি ছিলেন সবচেয়ে ধনী। ঐ গ্রামে আর এক ব্যক্তি ছিলেন সবচেয়ে গরীব।
গরিব ব্যক্তিটি সবসময় অাল্লাহকে দোষ দিতো তার গরিব হওয়ার জন্য।তার অভিযোগ ছিল তার কাচা বাড়ি থেকে একটু দূরে অন্য একটি অনেক ধনী আর সে কেনো গরিব।
ধনী লোকটি সবকিছু অনেক সহজেই পেয়ে যায়, গরিব লোকটিকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এরপরও কখনো কখনো তাকে খালি পেটে থাকতে হয়।
রোজ রোজ এই ব্যক্তির অভিযোগ শুনে আল্লাহ এদের দুজনকেই একি রকম গরিব করে দিলেন। আর দুজনকেই দুটি করে মাছ ধরার শিপ দিয়ে দিলেন। এখন দুজনের কাছে একি রকম সম্পদ রয়েছে।
তাদের দুজনের কাছে মাছ ধরার জন্য একটি শিপ ছিল আর তা দিয়ে দুজনেই মাছ ধরতে লাগল। প্রথম দিন তারা দুজনেই ১০ টি করে মাছ পেল।
যে ব্যক্তিট আগে থেকে গরিব ছিল সে দশটি মাছ বিক্রি করে ২০০০ টাকা আর তা দিয়ে সে তার ফ্যামিলির জন্য খাবার কিনল ও সারারাত্রি অনেক আনন্দ করে কাটিয়ে দিল।
এরপর যে ব্যক্তিকে আল্লাহ গরিব করে দিল সে নয়টি মাছ বিক্রি করে ১৮০০ টাকা পেল আর একটি মাছ দিয়ে সে তার পরিবারের সাথে ভাগ করে খেল। তারপর তিনি ১০০০ টাকা দিয়ে একটি মাছ ধরার শিপ কিনলেন আর ৫০০ টাকা দিয়ে মাছ ধরার জন্য একজন লোক নিলেন এবং প্রয়োজনের জন্য অবশিষ্ট ৩০০ টাকা রেখে দিলেন।
দিতৃীয় দিনে প্রথম ব্যক্তিটি যে আগে থেকে গরিব ছিল সে আবার ১০ দশটি মাছ পেল। ১০ টি মাছ বিক্রি ২০০০ টাকা পেল তা আলাদা আলাদা জায়গায় খরচ করে দিল।
দিতৃীয় ব্যক্তিটি দিতৃীয় দিনে ২০টি মাছ পেল, ১৮ টি মাছ বিক্রি করে ২ টি মাছ সে তার পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে খেল। যদিও এতে তাদের পেট ভরে নি তবুও তিনি এটিই করলেন। ১৮ টি মাছ বিক্রি করে তিনি ৩৬০০ টাকা পেলেন আর তা দিয়ে তিনি দুটো শিপ কিনলেন। এখন তার কাছে তিনটি অতিরিক্ত শিপ থাকল এবং ৫০০ টাকা করে তিনটি লোক রাখলেন আর বর্তমানে তার কাছে ১০০ টাকা রইল।
পুনারায় প্রথম ব্যক্তিটি ১০ টি মাছ পেল এবং তা বিক্রি করে কোনো না কোনো প্রয়োজনে খরচ করে দিল। সে তার কাছে কোনো সেভং রাখলো না।
দিতৃীয় লোকটি সন্ধ্যা হতে হতে ৪০ টি মাছ পেল এবং ৪ মাছ সে দিয়ে সে তার পরিবারের সাথে পেট ভরে খেল। ৩৬ টি মাছ বিক্রি করে সে ৭২০০ টাকা পেল এবং তা পুনারায় ৩ টি শিপ কিনলেন এবং আরো তিনটি লোক নিয়োগ দিলেন।এখন তার কাছে মোট ৭ টি শিপ আছে।
এরপর তিনি ৭০ টি মাছ পেলেন এবং ৪ টি মাছ পরিবারের জন্য রেখে ৬৬ টি মাছ বিক্রি করলেন এবং তা দিয়ে পুনরায় কিছু শিপ কিনলেন।
এই ব্যক্তিটি এভাবে প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করতে থাকল। কিছুদিন পর এই ব্যক্তিটি আগের থেকে অনেক বেশি ধনী হয়ে গেল। এখন সে তার পুরাতন বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়ি কিনল। এর পর তাকে আর মাছ ধরতে যেতে হয় না, এখন তিনি তার কাজের জন্য একজন হিসাবরক্ষক ও একজন ম্যানেজার নিলেন। এখন এই ব্যক্তিকে আর কাজ করতে হয় না, তিনি শুধু মাঝে মাঝে আসেন এবং কাজ দেখেন।
যে ব্যক্তিটি গরিব ছিল সে এখনো আল্লাহকে দোষ দিয়ে যায় যে কেনো তাকে গরিব করে দিলেন।
আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন আল্লাহ কারো পক্ষপাতিত্ব করেন না। তিনি সবাইকে সমান চোখে দেখেন, সবাই একই রকম সুযোগ দেন। কিন্তু কেউ সেই সুযোগ তাজে লাগাতে পারেন আর কেউ পারেন না।