অপরূপ পাকৃতিক সৌন্দর্য্যের নিলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার । পাহাড় আর সাগরের মিতালি এর এক অন্যোন্য বিশিষ্ট । এছারা সমুদ্রের উচ্ছাছিত তরঙ্গ মালা দিগন্ত জুরা ঝাওবন বিসতীর্ণ বেলাভূমি কক্সবাজার কে করেছে অনন্য । আর এর অনন্যতাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে সৌন্দর্য্যের এক নতুন সংযোযন মেরিন ড্রাইভ রোড । বর্তমানে কক্সবাজার ভ্রমনে পর্যটকদের অন্যতম আকর্শন মেরিন ড্রাইভ রোড । সমুদ্রের বিপরীতে পাহাড় বেয়ে ঝর্ণার ধারা, কোথাও আবার বিস্তৃন পাহাড়ি বনভূমি । বিশাল বিস্তৃন পাহাড় আর সাগরের মাঝ দিয়ে এগুতে থাকলে দেখা যায় জেলেরা দল বেধে মাছ ধরছে । সারি বদ্ধ ঝাউবন আর চিকচিকে বালি সৃষ্টি করে এক অনন্য সুন্দর নৈস্বর্গীক দৃশ্যের । ৮০ কিঃমিঃ দির্ঘ এই মেরিন ড্রাইভ রোড পর্যটকদের বিমোহিত করে দেয় । কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত পৃথীবির দীর্ঘরম এই মেরিন ড্রাইভ রোডের দু পাশের দৃশ্য যতটা মনোরম ঠিক ততটাই শ্রমশ্রাদ্ধ এর পেছনের গল্প গুলো । বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইনজ্ঞিনিয়ার কোম্পানি কন্সট্রাকশন ব্যাটিলিয়ান সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ সালে এই মেরিন ড্রাইভটির নির্মান কাজ শুরু করেন । পরবর্তিতে জুলাই ১৯৯৪ সালে সেনাবাহীনি প্রকল্পটি বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তানন্তর করেন । অতঃপর মানীনিয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পূনরায় প্রকল্পটির কাজ হাতে নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর । কিন্তু অপরূপ সুন্দর এই রাস্তাটিকে যেন কোন ভাবেই বাস্তবে রুপ দেয়া যাচ্ছিলো না । এঁকে একে বাধার সম্মক্ষিন হতে থাকে এই প্রকল্পটি । বাধাগুলোর অন্যতম ছিলো বাজেট স্বল্পতা । অবশেষে বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার সমস্ত প্রক্কল্পতি তিনটি ভাগে বিভক্ত করে অর্থায়ন করেন এবং তা নির্মানের নির্দেশ দেন । কলাতলী থেকে ইনানি পর্যন্ত ২৪ কিঃমিঃ এ মেরিন ড্রাইভটি সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ এ কাজ শুরু হয় । আর শেষ হয় জুন ২০০৮ এ । ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত ২৪ কিঃমিঃ দীর্ঘ দ্বীতিয় পর্যায়ের মেরিন ড্রাইভটির কাজ শুরু হয় জুলাই ২০০৮ আর শেষ হয় জুন ২০১৬ তে । শীলখালী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৩২ কিঃমিঃ বিস্তৃত তৃতিয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয় জুলাই ২০১৫ তে আর শেষ হওয়ার কথা ২০১৮ এর জুনে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিক নির্দেশনায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার সদস্যদের নিরলস চেষ্টা, মেধা, আর শ্রমের সম্মিলনে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই এর কাজ শেষ হয় । কাজের বিভিন্ন পর্যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের সদস্যদের ভিনিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে হয় । উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে রাস্তাটির ভাঙ্গন ছিল মূল সমস্যা । অন্যদিকে পাড়ার বেয়ে আসা পানির ঢল প্রায়সই রোড আম্বাকমেন্টকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে । ফলশ্রুতিতে প্রতিনিয়ত করতে হয় পুনঃ নির্মান । প্রকল্প এলাকায় নির্মান সামগ্রী পৌছানোও ছিল যথেষ্ট কষ্ট সাদ্ধ ও সময় সাপেক্ষ । লবনাক্ত আবহাওয়ায় রড, প্রকৈশল যন্ত্রপাতি ও অনান্য সংবেদনশীল ধাতুতে মরিচা ধরে যাওয়াই বেরে যেত নির্মান খরচ । আর এই মেরিন ড্রাইভনির্মানের সময় সেনাবাহিনীর ৪ সদস্য পাহাড়ি ঢলে মাটি চাপা পরে মৃত্য বরন করেন । রাস্তাটিকে বাচাতে একটার পর একটা আধুনিক ও সময়উপযুগী সমাধান বের করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর । যেমন ১৯৯৫ সালে সমুদ্রের ভয়াল থাবায় মেরিন ড্রাইভ নির্মানাধিন সময় সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় । পরবর্তিতে তা যেন আবার পূনরাবৃতি না হয় সে জন্য সেনা প্রোকৈশলিরা জিউটিউব দিয়ে অস্থায়ী রক্ষা বাধ স্থাপন করে । কিন্তু সূর্য্যের প্রখর তাপ , সমুদ্রের লবনাক্ত পানি, কাকড়া ও অনান্য সমুদ্রের প্রানীর জন্য জিওটিউবের কর্মক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায় । এতে প্রতি বছর এর পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় । সেনা প্রকোশৈলিরা এর স্থায়ী সমাধান খুজতে থাকে । নতুন পর্যায়ে কাজ শুরু করার জন্য ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটিলিয়ন সাগর থেকে সড়কটি রক্ষায় এক যুগান্ত কারি আইডিয়া আবিস্কার করেন । তারা স্থাপন করে ইট, সিমেন্ট আর লোহা দিয়ে তৈরি টেট্রাপট । বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত এই টেট্রাপটকে আমাদের দেশের উপযোগী করে সম্পূর্ন দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করে সেনাবাহিনীর প্রকৌশৈলিরা । সমুদ্রের ঢেউ টেট্রাপটে আছরে পরে শক্তি হারায় । টেট্রাপটের ব্যবহার করেই মে ২০১৬ এর প্রলয়নকারি ঘূর্নীঝর রুয়ানুর আধাত থেকে হীমছরিকে রক্ষা করা সম্ভব হয় । এর পাশাপাশি বেশ কিছু ঝুকিপূর্ণ পয়েন্টে কংক্রিট ব্লক, আর্টিকুয়েটেট কংক্রিট ম্যাট এবং স্থায়ী কার্ভ-সি ওয়ার্ল্ড তৈরির কাজ প্রকৃয়াধীন রয়েছ । মেরিন ড্রাইভে প্রথম, দ্বীতিয়, ও ত্বীতিয় ধাপে ঝাউ গাছ, গ্রামারী, কৃষ্ণচুরা রেইনট্রি সহ আরও অনেক প্রজাতির প্রায় ১০ লক্ষ গাছ রোপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী । কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডটি ৮০ কিঃমিঃ সড়ক নির্মান ইতমধ্যে শেষ হয়েছে । এতে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন যোগাযোগ সৃষ্টি হয়ে অত্র অঞ্চলের অধীবাসিদের জন্য এক অপার সম্ভাবনার দুওয়ার খুলে গেছে । স্থানীয় জনগনের আর্থ সামাজীক খাতে মেরিন ড্রাইভ রোড অনেক বড় অবদান রাখবে বলে মনে করি । তাদের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে । কর্ম সংস্থান বারবে শিক্ষার হার বারবে । এই রোডটির ফলে অত্র এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরন বেরে যাবে । মৎস প্রকল্পের উন্নয়ন হবে । এই রোডটি জনগকে লবনাক্ততা ও জলছ্বাস থেকে রক্ষা করবে । আর সবথেকে বড় সম্ভবনার সুচনা হবে পর্যটন শিল্পে । আশা করা যায় এই সড়কটি পর্যন শিল্পের মেরুডন্ড হিসেবে বিবেচিত হবে । এতে দেশিয় পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে । সর্বপরি সাব্রাং এলাকায় এক্সক্লুসিভ ট্যুরিষ্ট জোনের কার্যক্রমটি তরান্নিত হবে বলে আশা করা যায় । মেরিন ড্রাইভ শুধু একটি রোড নয় এটি একটি সফলতার প্রতিক । সুন্দর পরিকল্পনা, সঠিল দিক নির্দশনা , মেধা , শ্রম আর ত্যাগের এক অনন্য দৃষ্টান্ত এই মেরিন ড্রাইভ রোড । বাংলাদেশ সরকার এবং মানোনীয় প্রধান্মত্রীর উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে এই মোনরম সুন্দর মেরিন ড্রাইবের কাজ শেষ করা কনো ভাবেই সম্ভব হত না বলে আমি মনে করি । বাংলাদেশ সরকারের মানোনীয় প্রধানমন্ত্রী এর স্বপ্ন দ্রষ্ট্রা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর এর বাস্তবায়ন কারী ।
জলকন্যার অস্তিত্ব।
জলকন্যা নিয়ে অনেকের মনেই আছে অনেক কৌতূহল ,জানার আগ্রহ অনেক। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এমন এক কাল্পনিক জীবের কথা বলে আসছে...