সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। এর আগে আমি আমার প্রথম পোষ্টে তিনটি কবিতা লিখেছি। তবে আজ আমি আপনাদের কাছে আমার নতুন একটি কবিতা কবিতার মূল বিষয়বস্তুসহ পোষ্ট করলাম। আশা করি সবার এই কবিতাটি ভালো লাগবে।
নবপৃথিবী
যেদিকে দেখি পৃথিবীর অনবহিত আমি
কত অক্লান্ত সকলের ক্রিয়াসকলের ছায়ানটে
রাত্রিদিন–বিরামহীন–সময়ের অনির্বচনীয় সংহারে
মানব–হৃদয়ের যেই অবক্ষয় ঘটে–
সে তবু সংস্থাপিত হওয়ার বহু আগে
মৃত্যু এসে যায় আমাদের সকলের চোখে;
তবুও যতদিন বেঁচে থাকি– সেই এক চেতনায়
জ্ঞান কি অজ্ঞানের আলোকে কিংবা নিরালোকে
কেমন নিষ্পেষিত মনে হয় নিজেকে– যেন
আজকের এ পৃথিবীর অগণন মানুষের ভিড় মাঝে;
যেখানে প্রতিটি মানুষ তার কথা কাজ ও অসত্যের সাথে
জ্ঞাত– তবুও অমানবিক–এক তার বিবেকের কাছে
দীনতার অভাবনীয় স্বভাবের মতো অমায়িক সব সত্য বলে
কি নিত্য সুপরিচিত ও নিয়মিত–
যেন অতি সহজ পাওয়া গভীরতর শৃঙ্খলের মতন;
মনে হয়, কোনো–এক নবপৃথিবীর প্রত্যায়ন ব্যতীত
মানুষের যে ধাবমান নীতিহীন এক অপার্থিব মন
হয়ে চলেছে নিরন্তর তবু তিন যুগের শেষে এসে—
বিশুদ্ধ হবে না বুঝি কেউ, বিশুদ্ধ হতে পারে
তবে নতুন এক পৃথিবীর দ্রুততম আবেশে।
কবিতার সারবস্তুঃ
বর্তমান পৃথিবীতে সংখ্যাবহুল মানুষের যেমন ইয়ত্তা নেই তেমনি মানুষের যে নিত্য দৈনন্দিন অপকর্ম, কথায় কথায় মিথ্যা বলা, কপটতা ইত্যাদি বেড়ে চলেছে তারও কোনো অন্ত্য নেই।
প্রতারক, দস্যু, মাতাল প্রত্যেকেই জানে যে তার কাজ ঠিক হচ্ছে না— সে ভুল পথে চলেছে। কিন্তু তার আর ফিরবার শক্তি কোথায়? হয়তো ভুল করা মানুষের এ সত্যতা তার বিবেকে কিছুটা দংশন করছে, কিন্তু তার প্রবৃত্তি বশ মানছে না। এইরূপে ক্রমে ক্রমে তার বিবেক বুদ্ধিই যেন শিথিল বা শক্তিহীন হয়ে যাচ্ছে।
আর প্রবৃত্তির হাতে বিবেকের এই নিগ্রতাই মানুষের ভুলের পথে অগ্রসর হওয়ার দ্রুততম কারণ।
কারণ সে নিজের কাজের সমর্থক যুক্তি বের করে নিত্য প্রতিনিয়ত তার বিবেকের উগ্রতাকে প্রশমিত করে নিচ্ছে ও ভুল করে যাচ্ছে।
আর ভুল করেও যে নির্বিকার, আত্মবিচার যার নেই— যার কাছে সত্য কি মিথ্যা, পাপ কি পুণ্য, অর্থশূন্য শব্দ ছাড়া আর কিছুই নয়। তবুও মানুষ এই ভাবে ভুলের উপর ভর দিয়ে নিত্য কি রকম স্বাভাবিক।
কিন্তু মানুষের এই অন্ত্যহীন ক্রিয়াসকলে মনে হয় বাস্তবিকই নতুন কোনো পৃথিবীর প্রত্যায়ন ব্যতীত কেউ বিশুদ্ধ হবে না। বিশুদ্ধ হবে সকলে নতুন এক পৃথিবীতে।
সর্বোপরি সবাইকে বলছি যে,
যদিও পথ পরিক্রমায় কর্ম ও চিন্তায় অজ্ঞ–বিজ্ঞ সবাই কম বেশি ভুল করে। কেননা মানুষের মনের এ স্বভাবজ জ্ঞান অতি সংকীর্ণ। কিন্তু যদি প্রবৃত্তির তাড়নায় করে আসা সকল কাজের বিচার করে দেখা হয়, তাহলেই ভুলের রাস্তা ছেড়ে বের হওয়া সম্ভব।
কেমন লাগল কবিতাটি। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। সবাইকে ধন্যবাদ।