নিজের বা প্রিয়জনের অসুখ করলে মানুষের মন স্বাভাবিকভাবেই এমন দুর্বল হয়ে যায় যে তখন অপরের সহানুভূতি ও দ্রুত আরােগ্যকামী হয়ে পড়ে। অসুখ যদি গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী হয় তখন যথেষ্ট বিচক্ষণ ও মনােবলসম্পন্ন লােকের কাছেও যে কোনাে পরামর্শ-সে কোনাে ‘প্যাথি’ বা তাবিজ্ঞ কবচ আংটি যাই হােক না কেন সবই গ্রহণীয় হয়ে ওঠে- এমনকি কিছুটা তার স্বাভাবিক বৃদ্ধির পরিপন্থী হলেও। ব্যাপারটা নিয়ে বার্নাড শ (doctor’s Tilawat) বা রাজশেখর বসু (চিকিৎসা সঙ্কট) হাস্যরসের সৃষ্টি করলেও বাস্তব অবস্থার অসহায়তা অসংখ্য মানুষকে অহনিশ যন্ত্রণা দেয়। অসুখ বিসুখে সঠিক চিকিৎসার জন্য কখন কোথায় যেতে হবে তা ঠিক করতে না পেরে অসংখ্য মানুষ নানাভাবে কষ্ট-বঞ্চনা বা অসুবিধেয় পড়ছেন এ তাে সকলের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানকর্মী সংস্থার দ্বিমাসিক মুখপত্র বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী (বি-ও-বি) বিজ্ঞান ও সমাজ বিষয়ে তথ্য, বিশ্লেষণ ও লােচনা করে থাকে। বিজ্ঞানী ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি কি?-এটা আমাদের এক গুরুত্বপূর্ণ আলােচ্য বিষয়। সরকারি বেসরকারি নানান কাজকর্ম আচার অনুষ্ঠান রীতিনীতির মূল্যায়ন থেকে সমাজ ও বিজ্ঞান বিষয়ক নানান বিষয়ক নানান বিষয় ধরে আমরা আলােচনা করি। স্বভাবতই স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও আলােচনার একটি প্রধান বিষয়। বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী মূলত একটি আলােচনা মঞ্চ। কৃষি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিদ্যা প্রভৃতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় তত্ত্ব ও প্রয়ােগ সমেত একীভূত এক পাঠক্রম ও গবেষণা চললেও চিকিৎসা ব্যবস্থায় এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়। এদেশে বর্তমানে ২.৭ লক্ষ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানী আছেন, কবিরাজ আছেন ২.৪ লক্ষ, হােমিওপ্যাথ ১.১২ লক্ষ, উনানি ২৯ হাজার আর সিদ্ধ ১৮ হাজার। হােমিওপ্যাথি কলকাতায় এসেছে সওয়া শাে বছর আগে, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এসেছে তার কিছু আগে। উনানি এসেছে মধ্যযুগে মুসলমান বিজ্ঞান সংস্কৃতির সাথে আর এদেশে প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি হলাে আয়ুর্বেদ ও সিদ্ধ। আজকের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নানান ‘প্যাথির সাথে ঝাড়-ফুক, তাবিজ কবচ, মন্ত্র-তন্ত্র সবই চলছে। সরকার বা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সঙঘ থেকে কোনো রকম সুস্পষ্ট নির্দেশক বক্তব্য না থাকায় জনসাধারণ নানাভাবে বিভ্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গে হােমিওপ্যাথির বর্তমান জনপ্রিয়তা উনানি, সিদ্ধ, কবিরাজী তাে বটেই এমন কি কোথাও কোথাও প্রথাগত চিকিৎসা বিজ্ঞানকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাই হোমিওপ্যাথি নামক চিকিৎসা পদ্ধতির সঠিক সুষ্ঠু মূল্যায়ন একান্ত কাম্য। হােমিওপযাথি বিজ্ঞানভিত্তিক, কি বিজ্ঞান-বিরােধী, চট করে এ-রকম কোনাে রায় দিয়ে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। যে কোনাে পদ্ধতির ভিতরই অবৈজ্ঞানিক, নির্বিচার কিছু থাকলে তা চিহ্নিত হওয়া দরকার -শুধু হোমিওপ্যাথির বেলায়ই নয়, তথাকথিত আ্যালোপ্যাথি বেলায়ও দরকার, দরকার অন্য যে কোনাে প্যাথির ক্ষেত্রেও। আসলে সঠিক বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা ব্যবস্থা তাে একটিই হবে।
ব্রেন টিউমার দেরি নয়, সমাধান আজই
একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধনের সাথেসাথে উন্নত হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাও,সেই সাথে পরিবর্তন হয়েছে রোগের ধরনও।আগেকার যুগে ইনফ্লুয়েঞ্জা, কলেরা,...